অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি মতিউর রহমান হঠাৎ জানতে পারেন, তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ব্যাংকে গেলে সবাই তাঁকে অদ্ভুতভাবে দেখতে থাকেন। পরে মতিউর রহমান জানতে পারেন, তাঁকে মৃত হিসেবে নথিভুক্ত করেছে ব্যাংক।
এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪২ বছরের মতিউর রহমানকে ১ হাজার ৫০০ অস্ট্রেলীয় ডলার অথবা প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের সেবাগ্রহীতা মতিউর রহমান (৪২) সিডনির বাসিন্দা। স্থানীয় ব্যাংক শাখা তাঁকে ডলার তুলতে দেয়নি। পরে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যাংক নথিতে তাঁকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা রয়েছে বলে জানতে পারেন। তবে এ তথ্যের পক্ষে ব্যাংক কোনো মৃত্যুনিবন্ধন সনদ দেখাতে পারেনি। এমনকি তিনি বা তাঁর পরিবারের কারও কাছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো অনুসন্ধানী ফোনও করেনি। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সিডনিতে হোটেল সেবা পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন মতিউর রহমান। এই প্রতিবেদক মুঠোফোনে এসব তথ্য ভুক্তভোগী মতিউর রহমান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ একদিন আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ দেখায়। আমি ব্যাংকে সশরীর উপস্থিত হয়ে তথ্য চাইলে তাঁরা আমার দিকে উদ্ভট দৃষ্টিতে তাকায়। তাঁদের দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা কোনো মৃত মানুষকে হাঁটতে দেখছিল।’
মতিউর রহমান আরও বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁকে কোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করেনি। প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংক তাঁকে যোগাযোগ করতে বলেছে। এরপর মতিউর রহমান গ্রাহকসেবা নম্বরে ফোন করে প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে জানতে পারেন, বেনামে কেউ একজন ফোন করে তাঁকে মৃত হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল। আর এ জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সব ব্যক্তিগত তথ্য দিয়েছেন ওই ব্যক্তি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের করা প্রশ্ন, কখন মারা গেছেন, কীভাবে মারা গেলেন, বয়স কত, কোথায় বাস করতেন—এমন সব উত্তরও ওই ব্যক্তি দিয়েছিলেন।
এমন তথ্য পাওয়ার পরপরই ব্যাংক মতিউর রহমানের অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিয়েছিল। এ কারণে প্রায় তিন সপ্তাহ নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার তুলতে পারেননি তিনি। এরপর ১ হাজার ৫০০ অস্ট্রেলীয় ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভুলবশত এ রকম ঘটনা ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, মতিউর রহমানের তথ্যের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে, এমন আরেকজন গ্রাহকের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি গুলিয়ে ফেলেছিল।